শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি কি বৈশ্বিক দ্রব্য মূল্যের সাথে সংগতিপূর্ণ?

 বিশ্ব মানচিত্রে মানুষ নামের কলের মেশিন, প্রতিনিয়ত নিজেদের জীবন জীবিকার তাগিদে ছুটে চলছে দিক থেকে দিগন্তে! শুধু মাত্র নিজে, নিজের পরিবারের সদস্যের সাচ্ছন্দ্যকে প্রাধান্যের জন্য। ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা খরচ, পোশাক-আশাকের জন্য। তবুও যেন অভাব আর কষ্ট, খেটে খাওয়া মানুষের পিছু ছাড়ছে না। 

মানুষের মৌলিক চাহিদা, খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা এবং শিক্ষা। এই পাঁচটা চাহিদাকে সামনে রেখে আমাদের দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের কথা চিন্তা করতে হয়। 

চলুন বর্তমান দ্রব্য মূল্যের সাথে আমাদের নিম্ন আয়ের মানুষদের জীবন জীবিকার মান উন্নত নিয়ে একটু সমীকরণ দেখি-- 

বর্তমানে একটি পরিবার হিসাবে যেটা কে বুঝি- ছেলে, মেয়ে, স্বামী ও স্ত্রী মিলে চার জন সদস্য। এই চার জন সদস্যের একদিনে চাউল লাগে ২ কেজি, দাম ৫০ টাকা কেজি হলে ১০০ টাকা, ১ কেজি আলো ৬০ টাকা, ৪ টা ডিম ৮০ টাকা, লবন, তেল, মরিচ, হলুদ, গরম মশলা, পিয়াজ, রসুন সব মিলিয়ে আমরা এক দিনের শুধু মাত্র খাওয়ার খরচ ধরতে পারি কম পক্ষে ৩০০ টাকা! (বর্তমান বাজার মূল্যের কারণে)

চারজনের একটি পরিবারে খাওয়ার খরচ কমপক্ষে ৩০০ টাকা হলে ত্রিশ দিনে খরচ ৯০০০ টাকা। একটা বস্তির রুম ভাড়া ৩৫০০ টাকা। এর চেয়ে কম দামের রুমে সুস্থ মানুষ থাকবে না! এক দিনের খাওয়া ও থাকার জন্য দাড়ালো ১২৫০০টাকা। 

আমার প্রশ্ন-

তাহলে শ্রমিকের পোষাক কিনার টাকা কোথায়? বস্ত্র মানুষের মৌলিক চাহিদা। ছেলে, মেয়ের লেখা পড়া করার খরচ কোথা থেকে সংগ্রহ করবে? শিক্ষা মানুষের মৌলিক চাহিদা! চিকিৎসার খরচ কোথা থেকে সংগ্রহ করবে? চিকিৎসাও মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। 


মূলত শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির নামে সিনেমার টিকিট ( রেসন কার্ড) এই কার্ডের মাধ্যমে কি দিবে? সেটাও নিশ্চিত নয়। কি দিবে? কে দিবে? সেটাও নিশ্চিত নয়- একটা ধুয়াশা চিত্র বর্তমান মজুরিতে রয়ে গেছে। 

বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষ গুলো করোনা কালিন সময়ে - প্রতিদিন কারখানায় কাজ করেছে! যদিও কিছু দিন বন্ধ ঘোষণা করেছেলি কিন্তু সরকারি সরকারি- আধাসরকারী প্রতিষ্ঠান গুলো সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ ছিল। সে সময় একটা চিত্র বাংলাদেশের মানুষ লক্ষ্য করেছে সেটা হল-- সরকারি আধাসরকারী শ্রমিক কর্মচারিরা ছেলে মেয়ে নিয়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে গিয়েছে আর শ্রমিকরা ছুটেছে কারখানায়। 

কারণ একটায় সরকারি অধ্যাপকেরা বসায় বসে বসে করোনার সময় বেতন পেয়েছে কিন্তু এক জন শ্রমিকের চিন্তা ছিল- কারখানায় না গেলে মালিক বেতন দিবে না। 

মৃত্যুর ঝুকি নিয়ে শ্রমিকেরা কারখানায় যায় পরিবারের জন্য আর সরকারি আধাসরকারী শ্রমিক কর্মচারিরা অলস সময় কাটাতে বিভিন্ন পর্যটক কেন্দ্রে ঘুরে বেড়িয়েছেন। 

আজ শ্রমিকের মৌলিক চাহিদা পূরণে কত নাটকীয় ভঙ্গিতে ১২৫০০ টাকায় উপনীত হচ্ছে। 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দোহাই দিয়ে দিয়ে হয় তো নিজেকে গুটিয়ে নিতে পারবেন কিন্তু নিজের বিবেক কে কি জব্বাব দিবে? - নিজের বিবেক কে যারা বিক্রি করে এই মজুরি মেনে নিয়েছে তারা মালিক পক্ষের কাছে নিজের ইমান শক্তি কে বিক্রি করে দিয়েছেন বলে আমার মনে হয়। 

আশা রাখি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, জনগণ বান্ধব প্রধানমন্ত্রী, খেটে খাওয়া মেহনতী মানুষের জননী, তিনি যেহেতু ১৪ লক্ষ রোহিঙ্গাদের পাশে দাড়ায়ি তাদের মুখে আহার তুলে দিতে পারেছেন। তিনি তার নিজের মাতৃভূমির সন্তান দের নিবরাস করবেন না! জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবের আদর্শে উজ্জীবীত হয়ে শ্রমিকের পাশে থেকে তাদের মৌলিক চাহিদার কথা চিন্তা করে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি ভূমিকা রাখবেন। 


খোরশেদ আলম 

কাশিমপুর,গাজীপুর 


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন